Posts

আত্মঅনুসন্ধানের গল্প: নীল জানালার চিঠি

Image
নীল জানালার চিঠি: কলেজের করিডোর দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে রুদ্রর মনে হচ্ছিল, চারপাশের সবাই যেন দৌড়াচ্ছে জীবনের দিকে, শুধু সে একাই থেমে আছে কোথাও। প্রতিদিনের ক্লাস, পরীক্ষার তারিখ, নোটিশ বোর্ডের রুটিন – সব কিছুই যেন যান্ত্রিক। অথচ তার দিন কেটে যায় সেই জানালার ধারে দাঁড়িয়ে, যে জানালাটা কলেজ ভবনের পেছনে। জানালাটা বেশ পুরোনো, রঙ প্রায় উঠে গেছে, তবু সেখানে একধরনের শান্তি আছে। জানালার বাইরে এক বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছ, বসন্ত এলেই সে গাছ লাল ফুলে জ্বলে ওঠে। রুদ্র ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। গল্প-কবিতা পড়ার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই, তবে কলেজে এসে লেখার প্রতি আসক্তি বেড়ে গেছে। বন্ধুদের ভিড়ে সে একটু নিরালায় থাকতে ভালোবাসে, আর সেই নিরালা খুঁজে পায় এই নীল জানালার ধারে। জানালার পাশে একটা টানা বেঞ্চে সে প্রায় প্রতিদিন বসে থাকে, একা। কয়েক মাস আগে, একদিন সেখানে বসে হঠাৎ খেয়াল করল, জানালার সিলে একটা ছোট্ট কাগজ রাখা। কৌতূহলবশত খুলে দেখল সেখানে লেখা— তুমি কি জানো, এই জানালার পাশের কৃষ্ণচূড়াটা কবে প্রথম ফুল ফুটিয়েছিল? আমি জানি। আমি সেদিন এখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। রুদ্র ভেবেছিল, কেউ হয়তো মজা করে লিখেছে। কিন্...

মজার মজারকাটুন গল্প: বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল

Image
 মজার মজারকাটুন গল্প: বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল বিজ্ঞানী বাবু আর রোবট টুটুল এক গ্রামে বাস করতেন এক অদ্ভুত বিজ্ঞানী। গ্রামের সবাই তাকে ডাকত বিজ্ঞানী বাবু বলে। তিনি ছিলেন ছোটখাটো, মাথায় সাদা চুল, চোখে মোটা কাচের চশমা আর সবসময় গায়ে থাকত একটা ছেঁড়া ল্যাবকোট। গ্রামের অন্যরা যখন মাঠে কাজ করত, বিজ্ঞানী বাবু তখন ব্যস্ত থাকতেন তার গবেষণাগারে।  তার গবেষণাগারটি ছিল খুব অদ্ভুত। সেখানে ঢুকলেই দেখা যেত নানা রঙের বোতল, টুকটুকে আলো, গ্যাস বের হওয়া টিউব আর শব্দ করে ঘুরতে থাকা মেশিন। বিজ্ঞানী বাবু সবসময় ভাবতেন কিছু একটা নতুন বানাবেন যা শিশুদের উপকারে আসবে। একদিন হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি এল, তিনি বানাবেন এমন একটি রোবট যেটা শিশুদের বন্ধু হতে পারবে। নাম দিলেন টুটুল। টুটুল তৈরি করতে বিজ্ঞানী বাবুর সময় লেগে গেল তিন মাস। দিনে ঘুমাতেন, রাতে কাজ করতেন। কখনো কখনো ভুলে যেতেন খেতেও। অবশেষে একদিন টুটুল তৈরি হয়ে গেল। সে ছিল টিনের তৈরি, তার চোখ দুটো ছিল লাল আলোয় ভরা, মুখে সবসময় হাসি, আর পেটে ছিল ছোট্ট একটা স্পিকার যার মাধ্যমে সে কথা বলত। টুটুলের প্রথম কথাটি ছিল, আমি টুটুল, আমি এসেছি মজা করতে বিজ্ঞানী বাবু...

সফলতার গল্প: মেঘনা গ্রুপের কঠিন পরিস্থিতি থেকে সফল হওয়ার গল্প

Image
 সাফল্যের গল্প মেঘনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল: এক সফলতার গল্প বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও সুপরিচিত শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (MGI)। এই বিশাল সাম্রাজ্যের পেছনে যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম, দূরদর্শিতা ও সাহসিকতায় গড়ে তুলেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, তিনি হলেন মোস্তফা কামাল। একজন স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তা হিসেবে তার যাত্রাপথ, সংগ্রাম, এবং সফলতা আজ অনেক তরুণ উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণার উৎস। শুরুটা ছোট পরিসরে মোস্তফা কামালের জন্ম কুমিল্লা জেলায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী এবং পরিশ্রমী ছিলেন। শিক্ষা জীবন শেষে ব্যবসার প্রতি তার আকর্ষণ জন্ম নেয় এবং সত্তরের দশকে তিনি ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত ১৯৮১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এটি ছিল তার প্রথম শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যেখানে তিনি ভোজ্য তেল উৎপাদন শুরু করেন। এই ছোট উদ্যোগই একদিন গড়ে উঠবে বিশাল মেঘনা গ্রুপে—তখন তা কল্পনাও করা যেত না। ধাপে ধাপে সাম্রাজ্য গড়ে ওঠা প্রথমদিকে নানা প্রতিকূলতা ছিল। দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল স্থিতিশীল নয়, শিল্প স্থাপন সহজ ছিল না। তবুও মোস্তফা কামাল দৃঢ় মনোবল এবং অধ্যবসায়ে এগিয়...

ইসলামের ভিত্তি: কর্মবিমুখতা ইসলামের দৃষ্টিতে পরিত্যাজ্য আচরণ

Image
 ইসলামের ভিত্তি ১)  আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হলো সেই যে, কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিশ্রমী। (মুসলিম) ২) আলি (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: যে ব্যক্তি নিজ হাতের উপার্জন করে, সে আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। (আহমদ) ৩)  আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: কর্মবিমুখতা মানুষের মুখে অন্নের অভাব আনতে পারে। (বুখারী) ৪) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, নবী (সা) বলেছেন: তুমি যা খুঁজছ, সেটি তোমার কাজের মাধ্যমে আসবে। (আহমদ) ৫) আবু কাতাদাহ (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: অলসতা হলো গুনাহের একটি অংশ। (আহমদ) ৬)   আলী (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: সত্যিই, কর্মহীনতা থেকে দূরে থাকা হলো উন্নতির পথ। (তিরমিজি) ৭)   আবু হুরাইরা (রা) বলেন, নবী (সা) বলেছেন: মানুষের হাতে যা আছে, সেটি তার পরিশ্রমের ফল। (বুখারী) ৮)   ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: অলসতা মানুষের পরিত্যাজ্য। (মুসলিম) ৯)   আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেন: কর্মবিমুখতা আল্লাহর দৃষ্টিতে অপছন্...

মেয়ের সফলতার গল্প: কৃষকের মেয়ে বড় ডাক্তার

Image
 Success Story of a Girl একটি মেয়ের সংগ্রামের পর সফলতার গল্প প্রথম পর্ব: কঠিন জীবন সারাহ একজন ছোট্ট গ্রামে বাস করত। তার পরিবার ছিল নিম্নমধ্যবিত্ত, এবং অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে সারাহের পড়াশোনা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। তার বাবা একজন কৃষক, এবং মা গৃহকর্মী। সারাহ সবসময় তার স্বপ্নে বিশ্বাস করত যে সে একদিন বড় হয়ে একজন ডাক্তার হবে। কিন্তু তার পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন ছিল। প্রতি মাসে টিউশন ফি দিতে গেলে তার পরিবারকে অনেক কষ্ট করতে হত। দ্বিতীয় পর্ব: কঠোর পরিশ্রম সারাহ সিদ্ধান্ত নিল যে সে কোনোভাবেই তার স্বপ্ন পূরণ করবে। সে ক্লাসের পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি পড়াতে শুরু করল। সে তার ছোট ভাইবোনদের পড়াতো এবং এতে যে কিছু টাকা আয় হতো, তা দিয়ে নিজের বই কিনতে পারত। সারাহ মনে করত, যদি আমি কঠোর পরিশ্রম করি, তবে সফলতা আমার দিকে আসবে। একদিন সারাহের শিক্ষক তাকে বললেন, সারাহ, তুমি খুব মেধাবী। তোমার এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কথাগুলো শুনে সারাহ আরও উদ্দীপিত হলো। সে দিনের পর দিন বইয়ের সাথে সময় কাটাতে লাগল। তৃতীয় পর্ব: বাধা ও হতাশা তবে জীবন সহজ ছিল না। একদিন তার বাবার শরীর ...

ভয়ংকর ভূতের গল্প: কালবনের অভিশাপ

Image
 Terrifying Ghost Story ধাপ ১: প্রস্তাবনা রাতের আকাশে চাঁদের আলো ম্লান হয়ে আসছে। গ্রামের মানুষজন ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ছে। এ গ্রামের নাম কালাবন। কালাবনের পাশে এক বিশাল বন রয়েছে, যেখানে কেউ যেতে সাহস পায় না। গ্রামের মানুষেরা বলে, সেই বনে এক অশুভ আত্মা বাস করে, যে সেখানে গেলে আর ফিরে আসে না। অনেকে বলেছে, তারা রাতের বেলায় সেই বনের ভেতর থেকে ভৌতিক আওয়াজ শুনেছে। এসব শুনে গ্রামের সবাই ভয়ে থাকে, বিশেষ করে রাতের বেলায়। ধাপ ২: প্রধান চরিত্র পরিচিতি গল্পের প্রধান চরিত্র মধু, একজন ২৫ বছরের যুবক। মধুর দাদু এই কালাবন গ্রামেই থাকতেন আর ছোটবেলায় মধু মাঝে মাঝে তার কাছে আসতো। তবে দাদুর মৃত্যুর পর মধু বহু বছর গ্রামে আসেনি। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন মধু তার পুরানো স্মৃতি ঝালাই করতে গ্রামে ফিরে আসে। মধু খুব সাহসী। গ্রামের লোকজন যখন তাকে বনের ভুতের গল্প বলে, সে তা হাসিমুখে উড়িয়ে দেয়। মধুর বিশ্বাস, এসব শুধু গ্রামের লোকদের কুসংস্কার। তবে তার বন্ধুরা তাকে বারবার সাবধান করে, যেন সে বনের ধারে না যায়। ধাপ ৩: রহস্যের সূত্রপাত এক সন্ধ্যায়, মধু গ্রামের কাকুতি মিনতি শোনার পরেও বনের দিকে রওনা দেয়। তার মন...

ইলিশ মাছ খাওয়ার উপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ

Image
 Benefits of Eating Hilsa Fish ইলিশ মাছ, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মাছ, শুধুমাত্র স্বাদের জন্যই নয়, এর পুষ্টিগুণের জন্যও প্রসিদ্ধ। এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলসে সমৃদ্ধ। ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ এবং এর খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো: ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ  ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড : হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং স্নায়ু স্বাস্থ্য উন্নত করে। প্রোটিন : শারীরিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং মাংসপেশি গঠনে সহায়ক। ভিটামিন ডি : হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি১২ : শক্তি উৎপাদনে সহায়ক এবং রক্তের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। সেলেনিয়াম : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। ইলিশ মাছ খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা ১) হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। ২) ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক : নিয়মিত ইলিশ মাছ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ৩) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায় : ওমেগা-৩ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ও কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ৪) শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে : উচ্চ প্রোটিনের কার...